বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিসত্তার পরিচয় এনে দিয়েছেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন : তথ্য ও সম্প্রচার সচিব

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পিএএ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতিসত্তার পরিচয় এনে দিয়েছেন। তিনি একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। বিশ্বে বাঙালী জাতির মাথা উঁচু করেছেন। তাঁরই উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে জাতি রাষ্ট্রকে উন্নত জাতিতে পরিণত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আজ রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রচারণা কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, ঢাকা বিভাগীয় জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক কাজী গোলাম আহাদ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডির চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান টিটু, অধ্যক্ষ মোঃ আবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, উন্নয়নের এক মহাসড়কে বাংলাদেশ বিশেষ গতি নিয়ে অগ্রসরমান। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়ন থেমে থাকে নি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বিশ্বের অনেক দেশ নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপ অনুসরণ করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার বলেন, বাল্যবিবাহ সামাজিক অভিশাপ, নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথে অন্তরায়। বাল্যবিবাহ নারীর উজ্জল সম্ভাবনাকে অংকুরেই বিনষ্ট করে দেয়। তাই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা অতিমারিতে দেশব্যাপী বাল্যবিবাহ প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর মোকাবিলায় সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকেই স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। এ সময় তিনি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে, শিক্ষক, আনসার ও ভিডিপির গ্রাম দলনেতা-নেত্রী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন। একই সাথে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা গ্রহণের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের মেঘা প্রকল্প ও ১০টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের উদ্দেশ্য ও এর ফলাফল জনগণকে অবহিতকরণ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ঠ (এসডিজি), ভিশন-২০২১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে দেশব্যাপী প্রচার কা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মাদক, বাল্যবিবাহ, সন্ত্রাস জঙ্গী তৎপরতা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ, নারী ও শিশু পাচার ইত্যাদি প্রতিরোধে প্রচলিত আইন সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রামান্য অনুষ্ঠানে, পদ্মা সেতু ও রেল সংযোগ, ভাঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্ক, ইকোনোমিক জোন ইত্যাদির উপর নির্মিত প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, ঢাকার মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, ঢাকা-কক্সবাজার রেল সংযোগ, হাতির ঝিল প্রকল্প ইত্যাদির উপর প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সরকারের এসব মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন সূচিত হবে প্রামান্য চিত্রে তা তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে সরকারের উন্নয়নের তথ্যসম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এ প্রকল্পেরে আওতায় আনসার ও ভিডিপি কো-অপারেটিভ সোসাইটি (আভিকো) লিঃ এর সহযোগিতায় এলইডি ভ্যানের মাধ্যমে দেশব্যাপী ১৯ হাজার স্পটে প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে আরও ১৯ হাজার ৮৪৪ স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। গ্রামীণ নারী সমাজকে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় ১৩৯০টি মহিলা সমাবেশ করা হয়। ভাসমান জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে ৮ হাজার ৫২টি পথ সঙ্গীত অনুষ্ঠান করা হয়।