২৮ জুলাই হচ্ছেনা জাতীয় সংসদের সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন

আজ সোমবার (২৬ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছে। নির্বাচন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী এবং ওই আসনের সাত ভোটারের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে এ উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে স্থানীয় সাতজন বাসিন্দা সালেহ আহমদ, ফয়েজ আহমদ, বাবরু মিয়া, শিপন আহমদ, আব্দুল আলীম, তারিস মিয়া ও রিপন আহমেদ এবং ছয়জন আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম, আল-রেজা মো. আমির, মো. জোবায়দুর রহমান, মো. জহিরুল ইসলাম , মিসবাহ উদ্দিন এবং মুস্তাফিজুর রহমান এ রিট আবেদন করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার।
এর আগে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে রোববার আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদাকে উকিল নোটিস পাঠানোর একদিনের মাথায় সোমবার সকালে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করা হয়।
নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, “মহামারীর কারণে কয়েক দফা পিছিয়ে ২৮ জুলাই এ উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। আমরা আদালতের একটি আাদেশ পেয়েছি। সিলেট-৩ আসনের উপ নির্বাচন ৫ অগাস্ট পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আদালতের আদেশটি কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে। কবে ভোট করা যাবে সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
নেটিশে বলা হয়, দৈবদুর্বিপাকের কারণে সংবিধান অনুযায়ী সিলেটের এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন স্থগিত করা যাবে না-এ বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। ইসির উচিত চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে ‘লকডাউনে’র সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন না করা এবং ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যে কোনো সময়ে ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। তিন লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান ‘লকডাউন’ নীতিরও বিরোধী।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে সিলেট-৩ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের শর্ত ৪ অনুযায়ী পদ শূন্য হওয়ার দিন থেকে নব্বই দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সিলেট-৩ আসনে ভোট গ্রহণ হবে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট গ্রহণে সব পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছিলো। তাছাড়া সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. নিশারুল আরিফসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আতিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া ডাব প্রতীকে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য (বহিষ্কৃত) স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমেদ চৌধুরী মোটর গাড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।