ঈদের ছুটিতে ভারতে যাবেন কয়েক লাখ বাংলাদেশি

মার্চের শেষ থেকে পর্যটনসহ সব ধরনের ভিসায় ভারত ভ্রমণ করার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। ভারতের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার পর দেশটিতে যেতে ভিসার জন্য প্রচুর আবেদন জমা পড়ছে। বিশেষ করে পর্যটন ভিসা চালুর প্রথম কয়েক সপ্তাহে ভারতের ভিসার জন্য হাইকমিশনের ভিসা সেন্টারে প্রতিদিন দীর্ঘলাইন দেখা যায়। যদিও সেই ভিড় এখন কিছুটা কমেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভিসার আবেদন অনুসারে এবার ঈদের ছুটিতে ভারতে বাংলাদেশিদের স্রোত নামতে পারে। ঈদকেন্দ্রিক ছুটি কাটানোর জন্য প্রতিবেশী দেশটিতে যেতে পারেন কয়েক লাখ বাংলাদেশি। পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্টদের মতে, এ সংখ্যা ছাড়াতে পারে পাঁচ লাখ।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানায়, গত ৩০ মার্চ থেকে পর্যটনসহ সব ধরনের ভিসায় ভারত ভ্রমণের অনুমতি দেওয়ার পর বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর চালু করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি বাকি স্থলবন্দরগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখন সব ধরনের ভিসা নিয়ে সড়কপথে যে কোনো বন্দর দিয়ে ভারতে ঢোকা যাচ্ছে।
হাইকমিশন থেকে জানা যায়, দুই বছর করোনার কারণে অনেক বিধিনিষেধ ছিল। সেজন্য অনেকের ইচ্ছে থাকলেও ভারত যেতে পারেননি। এবার করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় ভ্রমণ ভিসায় ভারতে যেতে ইচ্ছুকদের ভিড় লেগে যায় সেন্টারে। এছাড়া সামনে ঈদুল ফিতরের কারণে অনেকে কেনাকাটা করতে কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে যেতে চাইছেন। সবমিলিয়ে ভারত ভ্রমণের জন্য ভিসা আবেদনের হিড়িক পড়ে যায়।
সূত্র মতে, এপ্রিলের প্রথম দিকে ভারতে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন কয়েক হাজার ভিসা আবেদন জমা পড়ে। এমনকি ১৩ এপ্রিল এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১১ হাজারে।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল ঢাকার সেন্টার থেকেই প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ভিসা দেওয়া হচ্ছে।এছাড়া ঢাকার বাইরে সারাদেশে আরও যে ১৪টি ভিসা সেন্টার (কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাতক্ষীরা, বগুড়া, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও যশোর) আছে, সেখানেও প্রতিদিন অনেক আবেদন জমা পড়ছে।
এক কর্মকর্তা জানান, হিসাব অনুসারে আবেদনকারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ পর্যটন ভিসা চেয়েছেন। এর আগে আবেদন বেশি ছিল মেডিকেল ভিসার। সাধারণত ঈদের সময় কিছু মানুষ কেনাকাটা ও ভ্রমণের জন্য ভারতকে বেছে নেন।
হাইকমিশন জানিয়েছে, আবেদনকারীদের ভিড়ের কারণে ভিসা সেন্টারে কাজের সময় বাড়িয়ে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ভিসা আবেদন জমার সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং ভিসা বিতরণের সময় (আবেদনকারীদের জন্য পাসপোর্ট সংগ্রহ) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবেদনকারীদের সহায়তার জন্য ভিসা কেন্দ্রে ডিসপ্লে মনিটর এবং চিহ্ন বাড়ানো হয়েছে। আবেদনকারীদের সাহায্যের জন্য বাড়ানো হয়েছে লোকবল। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কাউন্টারে তাদের সুশৃঙ্খল চলাচলে সাহায্য করতে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করতে ভিসা আবেদন কাউন্টারে অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং প্রদান সমন্বয় করতে রাখা হয়েছে নিবেদিত ফ্লোর ম্যানেজার।
এছাড়া প্রবীণ নাগরিক ও যুদ্ধের প্রবীণদের (মুক্তিযোদ্ধা) জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে ভিসা সেন্টারে।
ভিসা সেন্টারগুলো অতিরিক্তভাবে আগামী ১৭ এপ্রিলও (রোববার) খোলা থাকবে, যা সাধারণত সরকারি ছুটির দিন।