তরুণদের নেতৃত্বেই হোক উন্নত বাংলাদেশ

স্বাধীনতার ৫০ (সুবর্ণ জয়ন্তী) বছরের পথচলায় এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’, দারিদ্র্য আর দুর্যোগের এই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। সোনার বাংলা খ্যাত দেশটি এখন ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত বাংলাদেশ’ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে; ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে একটি উদ্ভাবনী দেশ হিসেবে বিশ্বমন্ডলে পরিচিত হতে চাচ্ছে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে। আজ ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর আয়োজনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে "আগামী ৫০ বছরে আমার স্বপ্ন” শীর্ষক ভিডিও প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন হেলথব্রীজ ফাউন্ডেশন অব কানাডা এর আঞ্চলিক উপদেষ্টা দেবরা ইফরইমসন। অতিথী আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা ১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিইআর এর প্রজেক্ট ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম হিল্লোল এবং আইডাব্লিউবি এর সাবেক ইন্টার্ন শাইকা চৌধুরী। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান এর সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম লিটন, মীর আব্দুর রাজ্জাক, মঞ্জুর মোরশেদ বিল্লাল হোসেন, জেসমিন পারু, মইনুল আলম, হাবীবুর রহমান, এম এ মান্নান মনীর, এবং তাহাজ্জৎ হোসেন প্রমুখ।
সূচনা বক্তব্যে দেবরা ইফরইমসন বলেন, আমরা যারা বাসযোগ্য পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি তাদের আওয়াজ আরো জোড়ালো করতে হবে। বর্তমানে বিভিন্নভাবে অনেকেই এই পৃথিবীকে দূষিত করছেন। তরুণ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। সমাজ ব্যবস্থায় প্রত্যেক মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে বৈষম্যহীন এক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন একটি দেশের স্বপ্ন দেখি। পরাধীন দেশের স্বপ্ন থাকে স্বাধীনতা, আর স্বাধীন দেশের স্বপ্ন হয় সীমাহীন আকাশচুম্বী। আগামী ৫০ বছরে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। জলবায়ু বিপর্যয় রোধে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। সেই সাথে নদী, সাগর এবং জলাধারগুলো আমাদের প্রয়োজনে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সঠিক প্রস্তুতি শুধু তরুণদের নয়, আমাদের এই দেশকেই নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়।
হামিদুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, স¦াধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা পরবর্তী দেশ গঠন করা বেশী কঠিন। দেশকে গড়ে তোলার যুদ্ধ অনন্তকালের। আমাদের প্রকৃত মানুষ হতে হবে। বাসযোগ্য পৃথিবী একটাই। এই বসুন্ধরাকে আমাদেরই সুন্দর করে রাখতে হবে। সারা বিশে^র প্রতিটি মানুষকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আর এই কাজগুলোকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে।
শাইকা চৌধুরী বলেন, পৃথিবীকে সকলের বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ণ করতে হবে। যে পরিকল্পনায় সকল বয়স, শ্রেণী, পেশার মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে। যান্ত্রিকবাহন থেকে পরিবেশবান্ধব বাহনকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সমাজে পিছিয়ে পরা মানুষগুলোকে সাথে নিয়ে এই বসুন্ধরাকে সকলের উপযোগী করে রাখা আমাদের দায়িত্ব।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, আগামী ৫০ বছর আমরা হয়তো অনেকেই থাকবো না। যারা রয়ে যাবে তাদের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে দেশটি। আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনসম্পদে ধনাঢ্য। কল্যাণকর রাস্ট্র গড়ে তুলতে হলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নীতিমালা গ্রহণের ক্ষেত্রে তরুণদের পছন্দ, মতামত ও ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। তরুণরাই বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।