১৬ ঘণ্টা পর আবার বন্ধ গণপরিবহন : যাত্রীর চাপ না কমা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকবে

 প্রকাশ: ০১ অগাস্ট ২০২১, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন   |   জাতীয়


রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের কাজে যোগদানের সুবিধার্থে সব ধরনের গণপরিবহন চালু করার ১৬ ঘণ্টা পর আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ তবে  আগামীকাল সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ চলবে বলে জানায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআইডব্লিটিএ। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি তারা। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে না পেরে রবিবার সকালে বাড়ানো হয়েছে লঞ্চ চলাচলের নির্ধারিত সময়। কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, যাত্রীর চাপ না কমা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল আমরা চালিয়ে যাবো। তবে এ বিষয়ে আজ রাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রফতানিমুখী শিল্প কল কারখানার শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে ভোগান্তি কমাতে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব জেলা এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া দৌলতদিয়া রুটে লঞ্চ চলার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ এই সিদ্ধান্ত নেয়।


ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার রাত থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে আন্তঃজেলা পরিবহন পরিবহন চলাচল করে৷ রোববার বেলা ১২টার পর টার্মিনাল থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ তবে যেসব বেলা ১২টার আগে স্টপেজ বা টার্মিনাল থেকে ছেড়ে গেছে, তারা সর্বশেষ স্টপেজ পর্যন্ত গাড়ি চালাতে পারবে৷

 সকাল থেকে নৌযান চলাচল করার কথা থাকলেও যাত্রী সংকটের কারণে সকালে আগে লঞ্চ ছাড়েনি৷  গত শনিবার (৩১ জুলাই) রাত ৮টা থেকে রোববার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হলেও পর্যাপ্ত যাত্রী না হওয়ায় বরিশাল নদীবন্দর থেকে ছাড়েনি ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চগুলো। তবে, অভ্যন্তরীণ রুটের কিছু লঞ্চ চলাচল করছে বরিশালে। তাছাড়া একটি লঞ্চ ঢাকা যেতে ৬০ থেকে ৭০ ব্যারেল তেল দরকার হয়। যাত্রী না হলে আমরা কীভাবে ছাড়বো লঞ্চ। লোকসান করে লঞ্চ চালানো সম্ভব নয়।  তবে বরিশাল নদীবন্দর থেকে ভোলাসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রুটে ৫টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঘাট ত্যাগ করেছে। তবে বরিশাল নদীবন্দরে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসা যেসব যাত্রী রয়েছেন তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য বরগুনা থেকে অভিযান ১০ ও রাজারহাট বি নামে দুইটি লঞ্চ আসছে, যেগুলো বরিশাল নদীবন্দরে নোঙর করে বরিশালের যাত্রীদের ঢাকায় নিয়ে যাবে।  

 অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্য লঞ্চকে জরিমানা করায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে এক ঘণ্টা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে কর্তপক্ষ। শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলো শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছানোর পড়েই অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগ এনে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সকাল ১১টা থেকে লঞ্চ মালিক সমিতি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে আলোচনা করে আবার দুপুর ১২টার দিকে পুনরায় লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ লঞ্চ চলাচল শুরু করতে অনুমতি দিয়েছে। তবে কয়টা পর্যন্ত চলবে তা বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হবে।
 রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা রোববার (১ আগস্ট) চালু হওয়ায় ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজে যোগ দিতে হাজার হাজার শ্রমিক ও যাত্রী ভিড় করেছেন চাঁদপুর লঞ্চঘাটে।   রাতে না ছাড়লেও রোববার ভোরে ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছাড়তে শুরু করে। তবে বেলা বাড়ার পর লঞ্চ না থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী। রোববার দুপুরে আরেক ঘোষণায় সরকার লঞ্চ চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তবে কখন লঞ্চ বন্ধ হবে, সে সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।   
 লকডাউন ছাড়া চাঁদপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন ১৭টি বিলাসবহুল লঞ্চ চাঁদপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে। কিন্তু প্রথমে শ্রমিকদের সুবিধার্থে স্বল্প সময়ের জন্য অনুমতি দেওয়ায় চাঁদপুর ও হাইমচর ঘাট থেকে আসা নয়টি লঞ্চ ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চাঁদপুর ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সবগুলো লঞ্চের প্রস্তুতিও ছিল না। প্রথমে নির্দেশনা ছিল, সকাল ১১টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার। যার কারণে কিছু যাত্রী আটকা পড়েছেন।



রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট মোটামোটি স্বাভাবিক। রাজধানী ঢাকাগামী শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ফেরি চলাচলের পাশাপাশি রোববার (০১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দৌলতদিয়ায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল তুলনামূলক কম। প্রয়োজনের তুলনায় সড়কে গণপরিবহন কম থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন বাহনে তারা দৌলতদিয়া আসছেন। তবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক লঞ্চ ও ফেরি চলাচল করায় নির্বিঘ্নে ভোগান্তি বা অপেক্ষা ছাড়াই নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীবাহী বাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করায় দেড় শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানকে লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে এই সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  তবে নদী পারের জন্য অল্প কিছু ট্রাক সিরিয়ালে আছে, যা পারাপার শুরু হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ১৬টি ফেরি চলাচল করছে।


জাতীয় এর আরও খবর: