রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়াণ দিবস আজ
আজ ২২শে শ্রাবণ, এশিয়ার প্রথম নোবেল বিজয়ী কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকার, সুরকার, গীতিকার, দার্শনিক, কবিগুরু বিশ্বকবি, সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়াণ দিবস আজ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বাংলা সালের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৭ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।বাংলা ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ (ইংরেজি ৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈতৃক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।রবীন্দ্রনাথের পূর্বপুরুষরা খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নানা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও নাটক প্রচার করবে।বাংলা একাডেমি অনলাইনে প্রবন্ধপাঠ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ছায়ানট কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসে ভার্চুয়াল ‘শ্রাবণের আমন্ত্রণে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি রাত ৯টায় ছায়ানটের ফেসবুক পেজে সম্প্রচার করা হবে।
১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। লিখেছেন বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়। বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত হয়েছে। ১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলী’ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
কবিগুরু ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, পাবনা, নাটোর এবং উড়িষ্যায় জমিদারি তদারকি শুরু করেন কবি। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন।
১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোর ও ওড়িশায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন কবি। এখানকার জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। কবি দুই হাজার গান রচনা করেছেন। অধিকাংশ গানে সুরারোপ করেন।
কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা।জীবিতকালে তার প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ৫২টি, উপন্যাস ১৩, ছোটগল্পের বই ৯৫টি, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬টি, নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃত্যুর পর ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশ পায়।
১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্মের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭৪টি চিত্রকর্ম শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে।কবি ২ হাজার গান রচনা করেছেন। অধিকাংশ গানে সুরারোপ করেন।
