প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে

প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। একদিকে কোভিড অন্যদিকে ডেঙ্গু, অনিশ্চিত আতঙ্ক এখন মানুষের মাঝে। আজ শনিবার (৩১ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৯৬ জন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ১৯৪ জন। আর ঢাকার বাইরের রয়েছেন ২ জন। একই সঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে চারটি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুলাই বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ২ হাজার ৬৫৮ জন। একই সময়ে তাদের মধ্য থেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৮৭৭ জন রোগী।
এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত অভিযানে ১৩ নির্মাণাধীন ভবন ও বাসাবাড়িকে এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতগুলো ২১৪টি নির্মাণাধীন ভবন, বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে ১৩টি নির্মাণাধীন ভবন ও বাসাবাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১৩টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে সর্বমোট এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। এছাড়া এডিস মশার লার্ভার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ বিরাজ করায় মোট ১১টি বাসা ও নির্মাণাধীন ভবনকে সতর্ক করা হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, সকলের সহযোগিতায় গাজীপুর সিটিকে ’ডেঙ্গু জিরো’ করা হবে। গাজীপুর সিটিতে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে পোল্যান্ড থেকে ৩০০ টন ওষুধ আমদানি করা হয়েছে। ৩০০টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এ ওষুধ ছিটানো হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের সকল কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারীকে তিনি এ মশক নিধনে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
সকালবেলার শুরুটায়, মানে যখন ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে তখন থেকে পরবর্তী ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা এডিস মশা তুলনামূলক বেশি সক্রিয় থাকে। আবার সন্ধ্যার আলো-আঁধারির মাঝেও বেশ শক্তিশালি থাকে এডিস মশা। এডিস মাশা সাধারণত অন্য মশাদের তুলনায় কালো ধরনের হয়ে থাকে। এর পায়ে এবং পাশে সাদা ডোরাকাটা থাকে। এডিস মশার মাথার পেছনে ওপরের দিকে কাস্তে ধরনের সাদা দাগ থাকে। এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলায় বেশি কামড়ায়। তাই এ সময় শরীর ভালোভাবে কাপড়ে ঢেকে রাখতে হবে। মানে ফুলহাতা জামা পরুন। দিনের বেলা পায়ে মোজা ব্যবহার করা যেতে পারে। শিশুদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরাতে হবে। যখনই ঘুমাবেন সেটা দিনে হোক বা রাতে, অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে।
দরজা-জানালায় নেট লাগাতে হবে। মশাকে বধ করতে পারে এমন স্প্রে, লোশন, কয়েল ও ম্যাট ব্যবহার করুন। মশা যেনো না কামড়াতে পারে এজন্য মশাবিরোধী ক্রিম বা তেল শরীরের খোলা স্থানে ব্যবহার করতে পারেন।
বাড়ির ছাদে বাগানের টবে বা পাত্রে যেনো পানি জমে না থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখুন। এমনকি ঘরের ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, বাড়িঘরের আশপাশে যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন।
বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার রাখুন। ঘরের বাথরুমে কোথাও জমানো পানি ৫ দিনের বেশি যেনো না থাকে।