ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার ক্রমেই বাড়ছে
একযুগ আগেও ভারতে মেডিকেল ট্যুরিস্টদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার ছিল ২৩ শতাংশের মতো, সেখানে গত বছর এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশের বেশি। ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশিরা চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ছাড়াও একই ধরনের খাবার, ভাষা, সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসা এবং সাংস্কৃতিক স্বাচ্ছন্দ্য অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০২০ সালে ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোক গেছে বাংলাদেশ থেকে। গত বছর ভারতের মেডিকেল ট্যুরিস্টদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ। দ্বিতীয় ইরাকিরা, তাদের হার ৯ শতাংশ। এরপর আফগানিস্তান থেকে ৬ শতাংশ, মালদ্বীপ থেকে ৪ দশমিক ৫ এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে গেছেন ৪ শতাংশ লোক। ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত সবশেষ পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
২০১৯ সালে ভারতে মেডিকেল ট্যুরিস্টদের মধ্যে বাংলাদেশিদের হার দাঁড়ায় ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, বিপরীতে মালদ্বীপের হার নেমে আসে মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। ওই বছর আফগান মেডিকেল ট্যুরিস্টদের হার ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে। ২০১৯ সালে তা কমে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর ২০২০ সালে আফগান মেডিকেল ট্যুরিস্টদের সংখ্যা আবারও বেড়েছে।
দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের বেশিরভাগ মেডিকেল ট্যুরিস্ট আসেন বাংলাদেশ এবং পশ্চিম এশিয়া থেকে। চেন্নাই পায় মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা এবং মরিশাস থেকে। ব্যাঙ্গালুরুর অধিকাংশ মেডিকেল ট্যুরিস্ট বাংলাদেশ, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকান দেশগুলো থেকে আসে।
প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠি জানান, করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে বিদেশি রোগীর সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। করোনার ধাক্কা সামলে ভারতের মেডিক্যাল টুরিজ্যম আগের অবস্থায় ফিরতে তিন থেকে ছয় মাস লাগতে পারে। ফ্লাইট চালু হওয়া, দূতাবাসগুলোতে মেডিক্যাল ভিসা ইস্যু হওয়া, এসবে সময় লাগবে। বর্তমানে শুধু জরুরি ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। মেডিক্যাল টুরিজ্যম ফের শুরু হতে ওইসব দেশের পাশাপাশি ভারতের মহামারি পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের বিদেশি রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই যান জটিল হার্ট সার্জারি এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে।
ডা. দেবী শেঠির মতে, বাংলাদেশিরা চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ছাড়াও একই ধরনের খাবার, ভাষা, সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসা এবং সাংস্কৃতিক স্বাচ্ছন্দ্য অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।