অনুষ্ঠিত হলো এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ইনেশিয়াল পাবলিক অফারিং রোড-শো

 প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১২:৫৭ অপরাহ্ন   |   অর্থ ও বাণিজ্য



বাংলাদেশ পাবলিক ইস্যু বিধি-২০১৫ অনুযায়ী বুক বিল্ডিং মেথডের মাধ্যমে ইনেশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও)-তে যাত্রা শুরু করলো এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। আজ ২৪ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে একটি রোড শো`র মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। রোড শো`র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ, চেয়ারম্যান মিসেস তাহমিনা বেগম, ডিরেক্টর মাকসুদ আহমেদ, ডিরেক্টর সাদিয়া আহমেদ, কোম্পানীর সতন্ত্র পরিচালকগণ, কোম্পানী সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইস্যু ম্যানেজার-এর প্রতিনিধি, রেজিষ্টার অফ ইস্যু এর প্রতিনিধি, আন্ডাররাইটারসহ মার্চেন্ট ব্যাংক, ফান্ড ম্যানেজার, বন্ড ম্যানেজার, ইনসুরেন্স কোম্পানী, ডিএসই-সিএসই ট্রেক হোল্ডার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এনবিএফআই ও পাবলিক ইস্যু আইন-২০১৫ আনুসারের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ।

মার্কেট শেয়ার অর্জনের জন্য এবং বাংলাদেশের একটি সনামধন্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীতে পরিণত করতে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড বুক বিল্ডিং মেথডের মাধ্যমে বি এস ই সি এর অনুমোদন সাপেক্ষে ৯৫ কোটি টাকার জন্য আইপিও-তে অংশগ্রহণ করছে। আইপিও-তে ব্যয়ের পর প্রতিষ্ঠানটি বাকি টাকা দিয়ে নতুন ফ্যাক্টরি বিল্ডিং স্থাপন, ক্যাপিটাল ম্যাশিনারিজ এবং লোন পরিশোধে ব্যয় করবে।

অনুষ্ঠানে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ বলেন, "সফলভাবে আইপিও সস্পূর্ণের মাধ্যমে আমরা আমাদের কাঙ্খিত উৎপাদন ক্ষমতা এবং মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে পারবো। প্রোজেক্টেড ফিনেনসিয়াল স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, ২০২৫ এ আমাদের সেলস রেভিনিউ হবে ২৮৭.৬৩ কোটি করের পর নিট মুনাফা দাড়াঁবে ৭৩.৯২ কোটি টাকা এবং উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হবে বছরে ২.৮৭ কোটি পিস। অর্থাৎ সেলস রেভিনিউ বর্তমান সেলস রেভিনিউ থেকে ৯৮% বাড়বে এবং পরিশোধের সময়কাল হবে ২.৫ বছর। আমরা বাংলাদেশের মার্কেটের চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতেও তখন রপ্তানি করতে পারবো। এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিঃ এ বিনিয়োগ করার এখনই সেরা সময় এবং আমরা আমাদের শেয়ার হোল্ডারদের সঠিক রির্টান দিতে সক্ষম হব এবং পুঁজিবাজারে আমাদের পরবর্তী মাইলফলক শুরু করতে পারব।"

গত কয়েক বছরে লোকাল ওষুধ কোম্পানীগুলো গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করছে যার ফলে বাজারের ৯০% ওষুধ লোকাল কোম্পানীগুলোর দখলে রয়েছে। সাম্প্রতিককালে, ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটের বেশ ভালো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এটি ৬ বিলিয়ন ডলারের মার্কেটে পরিণত হবে যা ২০১৯ থেকে ১১৪% গ্রোথে থাকবে। যেহেতু এশিয়াটিকের তার গুনগত মানের কারণে ডাক্তারের কাছে অত্যন্ত সুনাম রয়েছে, তাই আমাদের একটি বিশাল সুযোগ রয়েছে একটি এন্টি-ক্যান্সার প্ল্যান্ট স্থাপন করার; যা শুধু দেশেই সরবরাহ নয় বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক ও উপস্থিত সকলের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখা হয়, যেখানে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড আইপিওতে আসার নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পলিচালকসহ অন্যান্য  পরিচালকবৃন্দ।

এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিঃ কোম্পানি আইন ১৯১৩ এর অধীনে ২৫শে জুলাই ১৯৭০ এ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং পরবর্তিতে তা ২০২০ এর ১২ মার্চ প্রাইভেট থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীতে রূপান্তরিত হয়। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর সময় প্রতিষ্ঠানটি এন্টিসেপটিক সলিউশন বাজারজাত করে এবং জীবন রক্ষাকারী কিছু ওষুধ সরকারীভাবে সরবরাহ করে। এশিয়াটিক বায়োলজিক্যাল, নন-বায়োলজিক্যাল এবং স্টেরাইল প্রোডাক্ট যেমন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপ, ক্রিম, আই প্রোডাক্ট, ইনজেকশন ইত্যাদি উৎপাদন ও মার্কেটিং এ নিযুক্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে, বিভিন্ন গ্রুপের ৮০ টি জেনেরিক বাজারে সরবরাহ করে যেমন- এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিস্টামিন, ভিটামিন মিনারেলস, এন্টি আলসারেন্ট, ল্যাক্সাটিভ, স্কিন প্রোডাক্ট, আই প্রোডাক্ট, এনএসএআইডি (NSAID) ইত্যাদি।

বর্তমানে প্রতি বছর ৬ মিলিয়ন পিস ট্যাবলেট, ৫ মিলিয়ন পিস ক্যাপসুল, ২ মিলিয়ন পিস ইনজেকশন, ১.৫ মিলিয়ন টিউব ক্রিম, ১.৬ মিলিয়ন বোতল সিরাপ উৎপাদন করছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিঃ। যেখানে প্রায় ২৮৫ টি ওষুধের অনুমোদন রয়েছে যার মধ্যে বর্তমানে ২৫৫ টি আইটেম উৎপাদন করা হচ্ছে।