সাতক্ষীরার আশাশুনির স্বপ্নের মানিকখালী সেতুর দ্বার উন্মোচন

মিম জামান ( সাতক্ষীরা) : অবশেষে সাতক্ষীরার আশাশুনির স্বপ্নের মানিকখালি ব্রিজের দ্বার উন্মোচন করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের-এমপি। দেরিতে হলেও নদীবেষ্টিত সাতক্ষীরার সঙ্গে আশাশুনি, পাইকগাছা ও কয়রার সড়ক যোগাযোগে নতুন আরেক সম্ভাবনার সূচনা করেছে এ সেতু। সেতুটি খুলে দেওয়ার ফলে সারা দেশের সঙ্গে ওই তিন উপজেলার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের আরেক দ্বার খুলে গেলো। ফেরি পারাপারের ভোগান্তি দুর হলো, বাঁচলো সময় ও অর্থ। এক বছর আগে সেতুর দ্বার খুলে গেলেও নতুন করে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়েছে। সেতুর উপর চলাচলে নির্ধারণ করা হয়েছে ‘টোল’। দুর্যোগ কবলিত অসহায় আশাশুনির প্রতাপনগর, খাজরা, আনুলিয়া বড়দল ইউনিয়নের মানুষ এ সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করবেন। এছাড়া খুলনার পাইকগাছা ও কয়রার দুর্যোগ-দুর্গত মানুষও চলাচল করবেন এ সেতু দিয়ে। এসব মানুষের কাছ এক বছর পর এসে আদায় করা হবে টোল। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন হাড়জোড়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক-এমপির অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর উপর মানিকখালী সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সেতুটি নির্মাণে কয়েকবার স্থান পরিবর্তন হয়। এমনকি নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা থমকে যায়। ঠিকাদার পরিবর্তন হয়। নকশাও পরিবর্তন হয়। সব শেষে ডা: রুহুল হক-এমপির প্রচেষ্টায় সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
রোববার সেতুমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতু উদ্বোধন করেন। অবসান ঘটলো সেই দীর্ঘ অপেক্ষার। সময়ে সময়ে প্রকল্পের কাজ দীর্ঘায়িত হলে তা রূপ নেয় প্রতীক্ষায়। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে অবশেষে দক্ষিণাঞ্চলের দুর্যোগ কবলিত মানুষের এ আকাক্সক্ষা বাস্তব রূপ নিয়েছে ।
আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর উপর মানিকখালী সেতুর ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। রবিবার সকাল ১১টায় তিনি এ সেতুর উদ্বোধন করেন। আশাশুনি উপজেলাবাসির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সফরে এসে খোলপেটুয়া নদীর উপর মানিকখালী সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২৫-৫-১৭ তারিখে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২৫-৫-২০১৯ তারিখে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এই সেতু নির্মাণের ফলে আশাশুনি উপজেলার সাথে খুলনা জেলার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার যোগাযোগের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। উদ্বোধন শেষে আশাশুনি মানিকখালি সেতু প্রান্তে ফলক উন্মোচন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম। এ সময় তিনি বলেন, আশাশুনিবাসির প্রাণের দাবি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মানিকখালী সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে আজ বাস্তবায়িত হলো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নদী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য সেতু নির্মাণের মানুষের যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থার সুবিধা হয়েছে। এই সেতুতে ভবিষ্যতে যাতে টোল আদায়ে মুক্ত থাকে তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জিয়াউদ্দিন আহমেদ, তরিকুল ইসলাম, থানা অফিসার ইনচার্জ মো: গোলাম কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান স.ম. সেলিম রেজা মিলন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদ বাচ্চু, দপ্তর সম্পাদক জগদীশ সানা, আশাশুনি প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।