ফরিদপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থী আছাদের আর দেওয়া হলো না পরীক্ষা

নাজিম বকাউল (ফরিদপুর ): ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদী গ্রামের আবুল কালাম মাতুব্বরের ছেলে আছাদ মাতুব্বরের (২২)। রবিবার ১৪ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না। শনিবার(১৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে ফরিদপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে তার মৃত্যুর কারন নিয়ে রয়েছে নানান কথা।পরিবারের দাবি স্ট্রোকজনিত কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। আছাদের বোন আম্বিয়া(২৫)জানান, তার ভাই বিষ পান করেন নাই। আগের থেকে হার্টের সমস্যা ছিল। ষ্টোকজনিত কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা কাটা-ছেঁড়া না করার জন্য পুলিশের হাতে-পায়ে ধরেছি। পুলিশ তাও শোনেননি। তারা আমার ভাইকে নিয়ে কাটা-ছেঁড়া করেছে। রবিবার(১৪ নভেম্বর) দুপুর একটা পর্যন্ত লাশ থানায় রয়েছে।
প্রতিবেশিরা বলছে ভিন্ন কথা তারা বলছে, আছাদ স্থানীয় ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। এবারের এক সাবজেক্ট এর এসএসসি পরীক্ষার্থী আছাদ মাতুব্বর (২২) গত ১১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দ্বীতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সালথার বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিষ্ণুদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতিক নুরুল ইসলামের এজেন্ট ছিলো আছাদ। নৌকা প্রতিকের সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করছিলেন আনারস মার্কা নিয়ে খন্দকার শাহিন। নির্বাচনে ২২ ভোটে হেরে যান নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম। পরের দিন শুক্রবার বিজয়ী আনারস প্রতিকের সমর্থকেরা আনন্দ উল্লাস করছিলেন বিষ্ণুদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। আছাদ এর বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে হওয়ায় সে ওই উল্লাসে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি ও তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিজয়ী আনারস প্রতিকের সমর্থকেরা। পরে রাগে ক্ষোভে শনিবার সকালে আছাদ বিষ পান করে, সকালে ধান খেতে যায় ধান আনতে। ধানের বোঝা মাথায় করে বাড়ির উঠানে আনার পর সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে প্রথমে নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শরীরের অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ফরিদপুরে রেফার করেন। ফরিদপুরে নেওয়ার পথে শসা গ্রামের ব্রীজের নিকট গেলে তার মৃত্যু হয়।
আছাদের এই মৃত্যু নিয়ে নানান কথার কারনে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয়দের দাবী, লাশ কাটাছেড়া না করানোর জন্য তার পরিবার অন্য কথা বলছে। বিষ পানের কথা গোপন করে ষ্টোকের কথা বলছে। পরিবারের লোকজন পুলিশ কে অনুরোধ করছিলো যেন লাশ থানায় না নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এক পর্যায়ে তিনি মোবাইলের সুইচটি বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ আসিকুজ্জামানের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, আমি এরকম ঘটনা শুনেছি। তবে আমি কনস্টেবল নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় জেলার বাইরে দ্বায়িত্ব পালনে রয়েছি। এ কারনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।